N95 মাস্ক বর্তমানে সবার পরিচিত একটি নাম। বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য বহু গুনে বেড়ে গেছে এই মাস্কের চাহিদা ও ব্যবহার। বাতাসে থাকা অতি সূক্ষকণাকে ছাকতে পারায় অন্যতম প্রতিরোধকারি সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এই মাস্ক।১৯৭২ সালে প্রথম তৈরি করা হয় এই এন ৯৫ মাস্ক।এটি প্রথম তৈরি করেছিল যুক্ত্রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান 3M. কিন্তু কিভাবে তৈরি করা হয়েছিল এই মাস্ক বা তখন কার সময়ে কেন তৈরি করা হয়েছিল তা ্আজকে আপনাদের জনাতে চলেছি।চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এই N95 মাস্ক তৈরির ইতিহাস সম্পর্কে।
|
ফেইস মাস্ক প্রথম ব্যাবহার
করা হয় অনেক আগে।সেই ১৫ শতকের শুরুতে কবর খনন কারি ও মরদেহ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা
দুর্গন্ধ থেকে বাচতে কাপর দিয়ে নাক ঢাকতো।পরে ১৬ শতকের শুরুতে ইউরোপে যখন প্লেগ
মহামারি আকার নেয় তখন আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত ডাক্তাররা একধরনের মাস্ক ব্যবহার
করতো।এটি দেখলে হয়তো আপনি এটাকে এখনকার মাস্কের ধারে কাছেও আনতে পারবেন না। কারণ
এটি দেখতে পাখির ঠোটের মতো ছিল। যার সামনের দিকে একধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করা হতো।
তখন মনে করা হতো দুর্গন্ধ থেকেই মহামারি ছড়ায়।এমন ধারনা থেকেই ব্যবহার করা হতো এই
ধরনের মাস্ক।কিন্তু পরবর্তীতে যখন ১৮৭০ সালের শেষের দিকে ব্যকটেরিয়া সম্পর্কে
ধারনা লাভ করে তখন বিলুপ্তি ঘটে এই মাস্কের।এরপর ১৮ শতকের শেষ দিকে চিকিৎসায়
সারজিক্যাল মাস্কের ব্যবহার শুরু হয়।উদ্দেশ্য অপারেশনের সময় চিকিৎসকের হাচি-কাশির
মাধ্যমে যেন রোগীর ক্ষত স্থান কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়প।পরবর্তীতে বাতাসের
মাধ্যমে প্লেগ ছড়ায় বিষয়টি নির্ণয় করেন এক চীনা চিকিৎসক ১৯ শতকের শুরুর দিকে।পরে
কয়েক স্তরের সুতি কাপড়ের সাহায্যে তিনি এমন একটি মাস্ক তৈরি করেন যেটি সহযেই মুখে
আটকে থাকতো। এই মাস্কের সাহায্যেই সেই সময় প্লেগের বিস্তার ঠেকানো সম্ভব
হয়।স্প্যানিশ ফ্লু এর সময় ও রক্ষা কবজের মতো কাজ করেছে এই মাস্ক।প্রথম বিশযুদ্ধের
সময় গ্যাস মাস্ক আবিষ্কার হলেও অত্যাধিক ওজনের কারনে সেটি তেমন জনপ্রিয়তা পায়না।
১৯৬১ সালে M3 কোম্পানি
নতুন একটি মাস্ক তৈরি করেন।প্রথমে এটি বাজারে ছাড়লেও এটি কেবল ধুলোবালি ঠেকেতেই
সক্ষম ছিল।১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে খনি দপ্তর ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত
প্রতিষ্ঠান একবার ব্যবহার করা যায় এমন মাস্কের রেস্পিটরের মানদন্ড ঠিক করেন।সেই
মানদন্ড অনুযাইয়ি M3 কোম্পানি
পরে বাজারে আনেন N95 মাস্ক।
শুরুতে এটি কারখানার জন্য ব্যবহৃত হলেও পরে টেনিসি বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যপক পিটার
সাই N95 মাস্কে
ভাইরাস প্রতিরোধি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। এরপর থেকে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে
ব্যবহার হয়ে আসছে N95 মাস্ক।কিন্তু
আপনার মনে প্রশ্ন তো জাগতেই পারে এর নাম এন৯৫ ই কেন হলো? অন্য কিছুও তো হতে পারতো।
আসলে এখানে N95 নাম
দিয়ে এর কার্যক্ষমতা বোঝানো হয়েছে। এখানে N মানে
নন র্যাজিস্ট্রেন্স টু অয়েল যার মানে এই মাস্কটি শুধু বস্তুকণা প্রতি রোধে অক্ষম।
কিন্তু তরল প্রতিরোধে সক্ষম নয়।আর বাতাসে ভাসা ৯৫ শতাংশ কনা ছাকতে পারায় এর নাম
হয়েছে 95 ।
এইভাবেই তৈরি হয় এন৯৫ মাস্ক।
যা ভাইরাস প্রতিরোধে সেই সময় থেকে আজকেও করোনা ভাইরাস মোয়াবেলায় গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে আসছে। রক্ষা করে আসছে ডাক্তার নার্সসহ অনেক চিকিৎসা কর্মী ও হাজার
হাজার সাধারণ মানুষকে। শুধু ভাইরাস প্রতিরোধেই নয় ব্যাকটেরিয়া বা ধুলোবালি
প্রতিরোধেও এই মাস্ক অত্যন্ত কার্যকরী। আর এত গুরুত্ত্বের কারনেই আমাদের এটা তৈরির
ইতিহাস সম্পর্কে জানা উচিত। আশা করি আপনি সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও এই মাস্কের
উৎপত্তির ইতিহাস সম্পর্কে জেনে গেছেন।
আমাদের লিখাটি ভালো লাগলে
অবশ্যই আমাদের জানাবেন এতে আমরা পরবর্তীতে লিখার উৎসাহ পায়। ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment