ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আপনার করণীয়
ভৌগোলিক অবস্থানের
কারণে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ খুব সাধারণ একটা ব্যাপার হলেও আমাদের প্রচুর
পরিমান ক্ষয়ক্ষতি করে চলে যায় এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলো। এর মধ্যে অন্যতম একটি
হলো ঘূর্ণিঝড়। এটি সাধারনত বৈশাখ মাসের পর প্রত্যেক বছরই দুই একবার আঘাত হানে
আমাদের দেশে। কখোনো বা কম ক্ষয় ক্ষতি কখোনো বা প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়
এই ঝড়ের কারনে। যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাই মানুষের হাতে কিছু থাকেনা। কিন্তু
কিছুটা সচেতন হলে আমাদের এই দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কমানো সম্ভব। এইজন্য
আমাদের সচেতন্তা দরকার। নিচে কিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান হ্রাস করা সম্ভব সেই
সম্পর্কে কিছু ধারনা/পরামর্শ দেওয়া হলোঃ
ঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পরে দুর্যোগকালে আমাদের করণীয়
১। ঘরগুলোর
অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে প্রথমে এবং দেখতে হবে যথেষ্ট মজবুত আছে কিনা। যদি না থাকে
তাহলে খুটি পুতে অথবা রশি দিয়ে বেধে বা অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করে প্রয়োজন মতো
মজবুত করে নিতে হবে।
২।দুর্যোগকালীন
সময়ে স্বেচ্ছাসেবক বা আবহাওয়া অধিদপ্তরের
আওতাধীন লোকদের থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহন করতে হিবে ও সেই অনুযায়ি প্রস্তুতি
গ্রহন করতে হবে।
৩।বিপদ সংকেত
পাওয়ার পর বাড়ির মেয়ে, শিশু ও বৃদ্ধদের আগে আশ্রয়কেন্দ্রে বা বাড়ির আশেপাশে অথবা
আত্মীয়ের বাড়ীতে নিরাপদ স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা সময় নষ্ট না করে প্রস্তুতি নিয়ে
রাখতে হবে
৪।বাড়ি ছেড়ে
যাওয়ার সময় যাতে দ্রুত সময়ে বাড়ির আগুন,গ্যাসের চুলা বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে যেতে
পারেন সেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
৫।অতিপ্রোয়জনীয়
কিছু দ্রব্য সামগ্রী যেমন চাল,ডাল,পানি,লাইট,মোবাইল,ওষুধ ইত্যাদি আরো যা যা আপনারা প্রয়োজন হতে পারে তার লিস্ট করে গুছিয়ে
রাখুন যাতে খুব দ্রুত সেগুলো নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে পারেন।
৬। এছাড়া
অন্যান্য নিত্য ব্যবহায্য জিনিসপত্র ও মূল্যবান সামগ্রী যেমন টাকা,দলিল,চাল,ডাল,চিনি
ইত্যাদি পানিরোধক পলিইথিন ব্যাগ দিয়ে
ভালোভাবে বেধে মাটির নিচে পুতে রাখুন।এবং অবশ্যি তা পরিবারের অন্য সদস্যদেরত
জানিয়ে রাখবেন।
৭।গরু,ছাগল,হাস,মুরগি
নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখুন। যদি কোনো স্তাহ্ন খুজে না পান তাহ্লে কোনো চিহ্ন করে
তদের ছেড়ে দিয়ে নিজের মতো করে বাঁচার চেষ্টা করতে দিন।
৮।শক্ত গাছের
সঙ্গে লম্বা মোটা কয়েক গোছা দড়ি বেধে রাখুন যাতে প্রবল ঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের সময়
আপনি এইটা ধরে নিজের ভারসম্য ঠিক রাখরতে পারেন।
৯। এছাড়া হাতের
কাছে ড্রাম বা এই জাতীয় কিছু থাকে যা পানিতে ভাসমান তাহলে তা হাতের কাছে রাখুন।
যাতে বিপদের সময় আপনি এইটা ধরে ভেসে থাকতে পারেন।
১০।আশ্রয়
নেওয়ার জন্য নির্ধারিত স্থানের আশেপাশের গাছগুলোর ডাল-পালা কেটে রাখতে হবে যাতে
আসন্ন ঝড়ে ডালপালা ভেঙ্গে বা গাছ উপড়ে আশ্র্য স্থলে না পড়ে।
১১।সবসময়
আবহাওয়ার খবর রাখতে হবে। এইজন্য সবসময় কছে রেডিও রেখে আবহাওয়ার খবর শুনতে পারেন।
১২।টিউবয়েলের
উপরিভাগ খুলে রাখতে হবে এবং
খোলা মুখে প্লিথিন দিয়ে বেধে রাখতে হবে যাতে দূষিত বা
লবনাক্ত পানি ভিতরে ঢুকতে না পারে।
দুর্যোগ
পরবর্তী/চলাকালীন করণীয়ঃ
১।ঘরের
দরজা-জানালা বন্ধকরে রাখুন।
২।ঝড়ের সময়
কোনো অবস্তাহতেই আশ্রয় স্যথান থেকে বের হবেন না।
৩। আবহাওয়ার
খবর রাখুন সবসময়।
৪।রাস্তাঘাটের
ওপর উপড়ে পড়া গাছপালা ও অন্যান্য ভেঙ্গে পড়া সামগ্রী পরিষ্কার করে রাস্তা ক্লিয়ার
রাখুন যাতে উদ্ধার কর্মী দল দ্রুত পৌছাতে পারে।
৫।আশ্রয়
কেন্দ্র থেকে দ্রুত মানুষকে ফিরতে সাহায্য করুন ও নিজ গ্রামে বা নিজস্ব জায়াগায়
অন্যদের থাকার ব্যবস্থা করে দিন।
৬। অতি দ্রুত
খাল,বিল, নদী-নালায় আটকে পড়া মানুষ ও পশু
পাখিকে উদ্ধার কর্মী দের সাথে নিয়েএকরুন।
৭।ক্ষতিগ্রস্তরা
যেন যথাযথ সাহায্য পায় সেদিকে খেয়াল রাখা এবং শুধু সাহায্যের চিন্তা না করে নিজে
যতটুকু সম্ভব বাড়ি ঘর মেরামতের কাজে লেগে পড়ুয়ন।
৮। ঝড় একটু
কমলেই ঘর থেকে বাইরে বের হবেন না। কারণ একটু পরেই আবার প্রবল বেগে ঝড় আসার
সম্ভাবনা রয়েছে।
৯।অসুস্থদের
জন্য দ্রুত হাসপাতেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।
১০।নারী,বৃদ্ধ,প্রতিবন্ধী ও অসুস্থদের জন্য আলাদে ত্রান লাইনের ব্যাবস্থ করে তারা যেন আগে ত্রান পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
১০।নারী,বৃদ্ধ,প্রতিবন্ধী ও অসুস্থদের জন্য আলাদে ত্রান লাইনের ব্যাবস্থ করে তারা যেন আগে ত্রান পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
আশা করি ভগবান কৃপা করলে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহন করলে আপনি বা আপনার পরিবার কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি
কমাতে সক্ষম হবেন।
No comments:
Post a Comment