বিনামূল্যে বিক্রি হচ্ছে তেল সাথে দেওয়া হচ্ছে প্রায় ৩৮ ডলার
|
তেলকে বলা হয়ে থাকে তরল সোনা।কারণ সারা পৃথিবী তেলের ওপর
নির্ভর করে চলে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই যার কাছে যত বেশি তেল সে ততই শক্তশালী। আর বাস্তবেও আমরা তাই দেখে এসেছি।যেসব দেশের কাছে যতবেশি
তেল তারা তাদের অর্থনীতিকে তত বেশি শক্তিশালী করতে পেরেছে। কিন্তু এখন যখন চারিদিকে অর্থনৈতিক মন্দা তখন সোনা আর লোহা কারো দামেই তফাৎ থাকে না।সবই এক সমান হয়ে যায়। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারনে তেলের অবস্থাও তাই।বরং আরো খারাপ অবস্থা। সারা বিশ্বের সকল কল-কারখানা,গাড়ি-ঘোড়া সব কিছুই বন্ধ। আর সেই কারনে স্বাভাবিক ভাবেই তেলের চাহিদা অনেক কম।আর তেলের ক্ষেত্রে
অন্যান্য পন্যের মতো ফেলে দেওয়ারও উপায় নেই। আর সেই কারনেই তেল মজুদ করে রাখার জায়গা দিন দিন কমে চলেছে।যার কারনে তেলের জাহাজ বা ওয়েল ট্যাংকারের
চাহিদাও বেড়ে গেছে। এই মুহূর্তে ফাঁকা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে এইসব ওয়েল ট্যাংকার
বা তেলের জাহাজ। কারণ, তারা হয় তেল নিয়ে অপেক্ষা করছে কোনো দেশে খালাসের
জন্য না কোথাও রাখার জন্য কারণ তাদের কাছে মজুদ তেলই যে কেউ নিচ্ছেনা।আর নিবেই বা কিভাবে,
সবারই তেলের ভাড় যে ভর্তি।আর তাই সেখানেও
খালাসের জায়গা নেই। রয়টার্সের দেওয়া এক তথ্যমতে, সারা দুনিয়ায় ৭৭০টি তেলের
সুপার ট্যাংকার রয়েছে, যার একেকটিতে মজুত করা যায় প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ
ব্যারেল তেল।কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রায় এসব তেলের ট্যাংকারের ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ তেল
মজুত রাখা হয়েছে।
এই কারনে আপনাকে এখন আর টাকা দিয়ে তেল কিনতে হবে না। বরং আপনি তেল কিনলে আপনাকে দেওয়া এক্সট্রা টাকা।তাও এক দুই টাকা না প্রায় ৩০০০ টাকা।কি শুনতে অবাক লাগছে? শুনতে
অবাক লাগলেও এটাই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সোমবার নজিরবিহীন এই পরিস্থিতির মধ্যে যখন বাজার
শেষ হল, তখন ফিউচার মার্কেটে মে মাসে সরবরাহের জন্য
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল মাইনাস ৩৭.৬৩
ডলার।এর মানে হল, তখন ক্রেতাকে প্রতি ব্যারেল তেলের সঙ্গে এই
পরিমাণ অর্থও দিতে রাজি ছিলেন উৎপাদক সংস্থা। চাহিদা না থাকা ও উৎপাদন অব্যাহত
থাকায় মে মাসেই তেল মজুদের আর জায়গা থাকবে না বলে আশঙ্কার কারণে এমন পরিস্থিতি
তৈরি হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের
অপরিশোধিত তেলের ব্র্যান্ড ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমেডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম
মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়িয়ে ইতিবাচক পর্যায়ে উঠে আসতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্ব মান সময় ৩টা
৫৬ মিনিটে ৩৯ ডলার পুনরুদ্ধার হয়ে এই তেল ১ দশমিক ৩৭ ডলারে বিক্রি হয়।যদিও তা অনেক
কম। কিন্তু মাইনাস থেকে প্লাসে আসতে পেরেছে। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে লকডাউনের
মধ্যে বিশ্বের বহু দেশের মানুষ এখন ঘরবন্দি থাকায় রাস্তাঘাট সব ফাঁকা, উড়োজাহাজগুলো বসে আছে, কারখানাগুলোও অন্ধকার।আর এই কারণে গত তিন মাসে
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের চাহিদা ৩০ শতাংশ কমে গেছে। এখন আপনার মনে হতেই
পারে তেল উতপাদন বন্ধ করে দিলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবে
ব্যাপারটা এত সোজাও নয় কারন একবার তেল কূপ থেকে তেল উৎপাদন শুরু করলে তা আর বন্ধ
করার উপায় থাকেনা।কারণ বন্ধ করতে গেলে বড় ক্ষতি হতে পারে তেল কূপের। এমনকি চিরতরে বন্ধ
হয়েও যেতে পারে মহামূল্যবান এই তেল কূপ। যার কারনেই বন্ধ করতে পারছেনা এই তেল কূপ
গুলো। আর তাই তেল রাখার জায়গারও দেখা দিয়েছে চরম সংকট।তাই আজ গলার কাটা হয়ে বিধেছে
এই তেল কূপগুলো।
যদি আমাদের লিখা আপনার
ভালোলেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের জানাবেন। কারণ আপনাদের পজিটিভ কথা আমাদের লিখতে
উৎসাহ যোগায়।ধন্যবাদ।