সাবধান! আপনার যেই কাজে অন্যজনের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে
সাবধান! আপনার যেই কাজে অন্যজনের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আমরা বাঙ্গালী। আমাদের
বহু প্রাচীন একটা অভ্যাস আছে সেটা হলো তিলকে তাল বানানো। আগে সেই তালটা অল্প কিছু
জায়গায় সিমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে ফেসবুক সহ অন্যান্য সামজিক মাধ্যমের কল্যাণে তা
মুহূর্তের মধ্যেই বিশ্ব ব্যাপি মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে।যাকে আমরা ভাইরাল বলেই
জানি।অনেকে ভাইরাল হওয়ার জন্য অনেক কিছু করে কিন্তু তার লক্ষ্যে পৌছাতে ব্যর্থ হয়।
আবার অনেকে জানেই না যে সে ভাইরাল নামক বস্তুটির কবলে পড়েছে। আর এই ভাইরালের জন্য
যে কতজনকে কতো রকম হেনস্থা হতে তা বলে বোঝানো যাবে না।বর্তমানে আমরা এমন একটা সময়
পৌছেছি যে যেইটাই দেখি তার ভালোমন্দ বিচার না করে তার একটা ছবি তুলে
অথবা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিই। আর ব্যাস কাজ শেষ। কিন্তু একবারও
ভেবে দেখিনা এর পরিনাম কি হতে পারে।কত ভয়ংকর হতে পারে পরিণাম। এখন যদি আমরা কাউকে
দেখি কোনো স্বামী তার স্ত্রীর পাশ ব্যাগ/ভ্যানিটি ব্যাগ কিছুক্ষনের জন্য ধরেছে তার
স্ত্রী ওয়াশ রুম গেছে বলে বা অন্য যেকোনো কারনে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার অবস্থার
একটা ছবি তুলে সামাজিক যগাযোগ মাধ্যমে ছাড়া হলো। ব্যাস তাকে যে কত
পাবলিকের গাল মন্দ শুনতে হবে সেইটা আপনাদের সবারই জানা। নতুন করে আর কি বলবো! শুধু
স্ত্রী না সেইটা মাও যদি হয় সেই বিচারটা করার আগেই সেইটা ভাইরাল করে দিই। কিন্তু
একবারো ভেবে দেখিনা এই একটি কারনে কত অপমান সহ্য করতে হয়।আর এতে তার জীবন পর্যন্ত
যেতে পারে। আবার আগে দেখা যেত কেউ যদি কোন দুর্ঘটনাই পড়ে তাহলে তাকে আগে হাসপাতালে
নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করা হত। কিন্তু এখন আমরা সমাজ ব্যাবস্থার এমন একপর্যায়ে এসে
পৌছেছি যে এখন বেশিরভাগ মানুষ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দূরের কথা আগে সেইটার ছবি
তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে ব্যাস্ততা বেশি দেখায়।আবার যদি কাউকে কোথাও
কথা কাটাকাটি করতে দেখে তাহলে তাহলে সেই বিষয়ে না জেনে এমন একটা ক্যাপশান
দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছাড়া হয় যে আসল কাহীনী বোঝার কোনো উপায় নাই। আবার শুধু এইটা
না ধর্মীয় উস্কানিমুলক কথা-বার্তা পাবলিকের মনে দাঙ্গার মতো জঘন্য কার্যকলাপ
সম্পন্ন করতেও এই ভাইরাল শব্দটীর জুরি নেই। আমরা এখন এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌছেছি
যে যেকোনো কাজ করতে গেলেও তার উল্টাটার কোপে পড়তে আপনার ১০ মিনিট সময় লাগবে না। আর
এইরকম রেকর্ডও এখন পর্যন্ত কম নয়। আর আপনি এইরকম অন্য কাউকে বিপদে ফেলতে ফেলতে
নিজে বিপদে পড়বেন না যে তার কিন্তু কোনো গ্যারান্টি নাই। তাই কোনোকিছু অনালাইনে
আপলোড দেওয়ার আগে ১০ বার করে ভাবুন সেইটা ঠিক হছে কিনা? আর যেইটা দিবেন দেওয়ার আগে
অবশ্যই তার সত্যতা নিশ্চিত করে দিবেন। অন্যথায় সাইবার আইনে আপনি যে কেস খাবেন না
তার কি গ্যারান্টি। আর অন্য কারো ছোটোখাটো ভুল গুলোকে ভাইরাল করা বন্ধ করুন পারলে
তাকে বোঝান বুঝিয়ে তার ভুলকে শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করুন। আর আপনার ছোট খাট মজার
জন্য কোনো ঘটনাকে তিল থেকে তাল বানবাবেন না।কারণ সেই তালের আঘাত সহ্য করতে না পেরে
যদি ওই লোকের জীবন নাশের ঘটনা ঘটে তাহলে আপনার জেলের ভাত খাওয়াও কিন্তু একপ্রকার
নিশ্চিতি বলা যায়।তাই নিজে সচেতন হোন অন্যকে সচেতন করুন।কারন সচেতনতাই পারে সমাজ
ব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে। তাছাড়া সম্ভব নয়।তাই যেকোনো কাজ করার আগে কমপক্ষে ১০ বার
ভাবুন।তারপরে কাজটি করুন। এত কিছুর পরও যদি আপনি না ভেবে এই কাজটি করে যেতে চান
তাহলে আমার আর কিছুই বলার নাই।ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। সুস্থ সমাজ গড়তে সহায়তা
করবেন। ধন্যবাদ।